বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুযোগে জঙ্গিদের তৎপরতা বাড়ছে বুয়েটে। ছাত্র রাজনীতি আবারো সচল করে বুয়েটকে জঙ্গিমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।
রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনা ও বিচারের রায় কার্যকরের দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।
এ সময় বুয়েটের প্রশাসনের উদ্দেশে জয় বলেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে আপনারা কি বুঝাতে চান? আপনারা কি বুয়েটকে জঙ্গিমুক্ত করতে পারবেন? পারবেন না। আপনাদের জন্য অশনি সংকেত এই জঙ্গি চক্র আপনাদেরকেই প্রথমে হত্যা করবে। বুয়েট প্রশাসনকে আবারো বিবেচনা করতে বলব ছাত্র রাজনীতি আবারো সচল করে বুয়েটকে জঙ্গিমুক্ত করার জন্য আপনারা পদক্ষেপ নেবেন। আপনাদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আপনাদেরকে অনুরোধ করছে।
তিনি বলেন, ওই বুয়েট ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা যারা মাথা ছাড়া দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখা হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে অনুরোধ করব যারা যারা বঙ্গবন্ধুর শোকের প্রোগ্রাম বানচাল করার প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছে তাদেরকে আপনারা খুঁজে বের করুন, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা উচিত। তারা রাষ্ট্রদ্রোহ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের মতো একটা কাজ করেছে।
বুয়েটের বিক্ষোভকারীদের জামায়াত-শিবির আখ্যা দিয়ে জয় বলেন, দেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক নেতৃবৃন্দরা কাজ করেছে। কিন্তু জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মারা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের সাথে কী বেয়াদবিটা করল দেখেছেন! এ ধরণের বেয়াদবদের থেকে ভালো কিছু বয়ে আসবে কখনো তা আমি মনে করি না। জাতির পিতা এই বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন তাকে নিয়ে যারা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাবে তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এসময় তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানান এবং যতদিন পর্যন্ত এই রায় কার্যকর হবে না ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।
অন্যদিকে বুয়েটে ছাত্রলীগের কমিটি দেয়ার দাবিতে মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের দু’জন নেতা। তাদের একজন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আমির হামজা। তারা শনিবার দুপুরে মধুর ক্যানটিন থেকে বুয়েট শহীদ মিনার পর্যন্ত এ দাবিতে লংমার্চ করার ঘোষণা দেন। পরে অবশ্য তারা এ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। তারা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক ব্যানারে কর্মসূচির আয়োজন করে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতির পুনরুত্থানের আশঙ্কা করে এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।