কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ কুইক রেসপন্স টিম ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায়। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই স্বেচ্ছাসেবী হয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই গত বছরের ২২ মার্চ থেকে মানবিক কাজের মাধ্যমে নিজেদের সোনালি অতীতের জানান দিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের নেতৃত্বাধীন টিম।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপির দিকনির্দেশনায় করোনা দুর্যোগের শুরু থেকেই জরুরী খাদ্য সরবরাহ কিংবা লাশ দাফন, কৃষকের পাশে দাঁড়ানো সহ দুর্দান্ত সব কাজে বাহবা কুড়িয়েছে তারা। এদিকে ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠনটির এমন কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ ভিন্ন মাত্রা যোগ করে বিগত দেড় বছর যাবৎ স্বেচ্ছাসেবী হয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা। জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের নেতৃত্বে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গত বছরের ২২ মার্চ থেকে শিফট ভাগ করে করোনা ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টা স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে চলেছে ছাত্রলীগের ৬৫ জন কর্মী। করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডগুলোতে স্বেচ্ছায় কাজ করে যাচ্ছেন তারা। করোনাকালীন সময়ে জেলা ছাত্রলীগের এমন কার্যক্রম ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা পুরোটা সময় ধরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে জীবাণুমুক্ত রাখার কাজের পাশাপাশি সমানতালে দৌড়াচ্ছেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীর জরুরী অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য। সাথে রোগীদের ঔষধ ও খাবার সরবরাহ করেছেন নিয়মিত। আর জরুরী প্রয়োজনে ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করিয়ে দেয়ার কাজটাও করেছেন তারা।
সম্প্রতি গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে কুষ্টিয়ায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত রোগী ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মারাও গিয়েছে অনেক মানুষ। আর এসব আক্রান্ত ব্যক্তিদের সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে ডাক্তার-নার্সদের। করোনা ওয়ার্ডে সার্বক্ষণিক কাজ করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কারণে তা অনেকটা সহজ হয়েছে ডাক্তার-নার্সদের। করোনা ওয়ার্ডে যেসব রোগীদের সাথে স্বজনরা আসেনি সেসব রোগীদের সমস্ত কিছুর দায়িত্ব নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ জানান, ২০২০ সালের ২১ মার্চ কুষ্টিয়ার গণমানুষের নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি মহোদয় নির্দেশ অনুযায়ী অতীতের ন্যায় মানবিক কাজের মাধ্যমে নিজেদের সোনালি অতীতের জানান দিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই নির্দেশক্রমে ২২ মার্চ থেকে ছাত্রলীগের ৬৫ জনের স্বেচ্ছাসেবী টিম ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে আসছে৷ তারা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ডাক্তার-নার্সদের সাথে সমন্বয় করে অন্যসব জরুরী সেবাও দিয়ে আসছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
কুষ্টিয়া জেলায় করোনা আক্রান্ত কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধিসহ এ পর্যন্ত মোট ১২১৭ জনের সেবা দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া বহু জনের লাশ দাফন/সৎকার ও জানাজা সম্পন্নের কাজও করেছে ছাত্রলীগ। মানুষের পাশে দাঁড়ানো বেশ ২২ জন ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবী কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ।
দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকা এমন কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ জানান, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই আমরা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি বিশেষ কুইক রেসপন্স টিম গঠন করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ১২১৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে ভালোবাসা, মমতা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছি। এছাড়া ছাত্রলীগের কুইক রেসপন্স টিম জেলায় করোনা আক্রান্ত কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি সহ একাধিক জনের স্ব-স্ব বাসভবনে গিয়ে সেবা দিয়েছে। আমরা কুষ্টিয়া জেলায় করোনায় মারা যাওয়া ৯ জন ব্যক্তির জানাজা সহ লাশ দাফন করেছি। আগামীতে যতদিন করোনার ছোবল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত না হবে ততদিন আমরা স্বেচ্ছায় জনগণের পাশে থাকবো।